
খেয়াল করলে দেখা যায়- আকাশ থেকে যখন পানি পড়ে, ফোঁটাগুলো বেশিরভাগ সময়ই গোলাকার বা বৃত্তাকার দেখায়। কিন্তু প্রশ্ন হলো- কেন এই ফোঁটাগুলো গোল হয়?
বিজ্ঞান বলছে, এর পেছনে রয়েছে এক দারুণ প্রাকৃতিক কারণ- ‘পৃষ্ঠটান’ (Surface Tension)।
বিজ্ঞানের ভাষায়, তরল পদার্থের অণুগুলো একে অপরকে আকর্ষণ করে। এই আকর্ষণের ফলে তরলটির পৃষ্ঠে একটি টান বা চাপ তৈরি হয়, যাকে বলা হয় পৃষ্ঠটান।
এই পৃষ্ঠটান জলকণাকে এমন একটি আকার নিতে বাধ্য করে, যেখানে তার পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল সবচেয়ে কম থাকে। সেই আকৃতি হচ্ছে গোল, কারণ বৃত্ত বা গোলাকার আকারে সবচেয়ে কম পৃষ্ঠ প্রয়োজন হয়। এই পৃষ্ঠটান জলকণাকে এমন একটি আকার নিতে বাধ্য করে, যেখানে তার পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল সবচেয়ে কম থাকে। সেই আকৃতি হচ্ছে গোল, কারণ বৃত্ত বা গোলাকার আকারে সবচেয়ে কম পৃষ্ঠ প্রয়োজন হয়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, কেন জলপ্রপাতের মতো একসঙ্গে ঝরে না পড়ে?
এর কারণগুলো হলো
1. ফোঁটার আকার খুব ছোট: মেঘের পানির ফোঁটা সাধারণত ব্যাসে মাত্র ০.০১ থেকে ০.২ মিলিমিটার। এত ছোট ফোঁটা নিচে নামার সময় বাতাসের প্রতিরোধে ধীরে পড়ে — একে একে ফোটায় ফোটায় ঝরে।
2. বাতাসের ঘর্ষণ ও বেগের ভারসাম্য: যখন একটি ফোঁটা নিচে নামে, তখন বাতাস তার বিপরীতে ঠেলে দেয়। ফোঁটা যত ছোট, তত বেশি বাতাসে আটকে যায়, ফলে ধীরে ধীরে নামে। এজন্য বৃষ্টির ফোঁটা হালকা ও আলাদা আলাদা হয়ে পড়ে।
3. ফোঁটার সংঘর্ষ ও ভাঙন: বড় ফোঁটা নিচে নামার সময় বাতাসের ধাক্কায় ভেঙে ছোট ফোঁটায় ভাগ হয়ে যায়। তাই একসঙ্গে অনেক জল নেমে “জলপ্রপাতের” মতো ধারা তৈরি করতে পারে না।
4. মেঘের উচ্চতা ও বাতাসের চলাচল: মেঘ অনেক উঁচুতে থাকে, সেখানে বাতাসের গতিবেগ খুব বেশি। এই বাতাস ফোঁটাগুলোকে ছড়িয়ে দেয়, ফলে তারা একসঙ্গে না পড়ে আলাদা আলাদা হয়ে নামে।
মেঘ থেকে জলপ্রপাতের মতো পানি পড়ে না কারণ বৃষ্টির ফোঁটাগুলো খুব ক্ষুদ্র, হালকা এবং বাতাসের ঘর্ষণে ধীরে ধীরে আলাদা আলাদা হয়ে পড়ে — একে আমরা দেখি “ফোটায় ফোটায়” বৃষ্টি হিসেবে।
মন্তব্য করুন