
কর্মবিরতি পালনের নামে সহকারী শিক্ষকরা আড্ডা দিচ্ছেন শিক্ষক অফিস কক্ষে। লক্ষ্মীপুরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একাই সব কয়টি শ্রেণি কক্ষের পরীক্ষা নিয়েছেন । এতে ফাঁকা পরীক্ষার হলে একে অপরের খাতে দেখে লেখা সহ শিক্ষার্থীদের বিশৃঙ্খলা করতে দেখা যায়।
সোমবার (১লা ডিসেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পরিষদের পাশে শহীদ স্মৃতি আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষার মত গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার ক্লাসগুলোতে এমন পরিস্থিতিতে পরীক্ষার মান নিয়ে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১১ তম গ্রেড ও পদোন্নতিসহ তিন দফা দাবীতে সারাদেশে কর্মবিরতি পালন করছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এতে বার্ষিক পরীক্ষা সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ থাকলেও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দুইঘন্টা পর পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করে শিক্ষতরা।
তবে শিক্ষা কর্মকর্তার নির্দেশনায়ও লক্ষ্মীপুর শহীদ স্মৃতি আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকগণ পরীক্ষা নিতে শ্রেণীকক্ষে যাননি। বাধ্য হয়ে প্রধান শিক্ষক একাই প্রথম শ্রেণি ও তৃতীয় শ্রেণি সকালে বাংলা বিষয় এবং দুপুরে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির ইংরেজী বিষয়ে মোট ৩০৮ শিক্ষার্থীর বার্ষিক পরীক্ষা নেন। এসময় পরীক্ষা কক্ষে কোন শিক্ষক না থাকায় শিক্ষার্থীদের একে অপরের খাতা দেখে লেখাসহ বিশৃঙ্খলা করতে দেখা যা। পরীক্ষা নিতে গিয়েও হিমশিম খেতে হয়েছে প্রধান শিক্ষককে। এতে চূড়ান্ত এ পরীক্ষার মান নিয়ে অনেক অভিভাবককে ক্ষুব্ধ হতে দেখা গেছে।
মো. মাসুম সহ কয়েকজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের আজকে ইংরেজি পরীক্ষা। কিন্তু পরীক্ষা কক্ষে কোন শিক্ষক নেই। একজনই চার ক্লাসের পরীক্ষা নিচ্ছোন। পরীক্ষার মান সঠিক হবে না। এটা শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনকে আরো হুমকিতে পেলে দিচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কে এম জহির উদ্দিন বলেন , সহকারী শিক্ষকগণ তাদের দাবীতে কেন্দ্রীয় কর্মসুচি অনুযায়ী কর্মবিরতি পালন করছেন। শিক্ষা অফিসারের নির্দেশনার পরও কেউ ক্লাসে যাবে না। তাই বাধ্য হয়ে ম্যানেজিং কমিটির সহযোগিতায় দুই ধাপে চার ক্লাসের ৩০৮ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা নিতে হয়েছে। সঠিক ভাবেই পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা করেছি।
তিনি আরো জানান, শুধু তার বিদ্যালয় নয়, জেলার সব কয়টি বিদ্যালয়েই প্রধান শিক্ষকগণ একাই পরীক্ষা নিয়েছেন বলে জানা তিনি
আন্দোলনরত সহকারী শিক্ষিকা মোজাহান বেগম সহ তিনজন শিক্ষক জানান, সহকারী শিক্ষকগণ দীর্ঘ দিন ধরে বৈষম্যের শিক্ষার। সরকার তিনটি দাবী মেনে নিয়ে পরিপত্র জারি করলেই আমরা কর্মবিরতি তুলে নিবো। পরে বন্ধোর মধ্যেই এসব পরীক্ষা আমরা নিবো। দাবী আদায় না হলে আরো কঠোর হুশিয়ারী দেন তারা।
এদিকে বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জামসেদ আলম রানাকে মুঠোফোনে জানালে তিনি সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে পাঠানো হচ্ছে বলে জানান।
তবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ওই বিদ্যালয়ে যায়নি।
বিষয়টি জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমজাদ হোসেন মুঠোফোনে জানান, বিষয়টি তিনি অবগত আছেন। সহকারী শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে এমটি হচ্ছে। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন