অনলাইন ডেস্ক: মানুষের ত্বক প্রতি ৩০ দিন বা এর কাছাকাছি সময়ে প্রাকৃতিকভাবে পুনর্জীবন পায়। এই প্রক্রিয়ায় ত্বকের বাইরের স্তর থেকে মৃতকোষ ঝরে পড়ে ও নতুন কোষ প্রতিস্থাপিত হয়। এই মরা কোষ নিচের নতুন কোষের সঙ্গে মিশে থাকে। এগুলো ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
যেমন-ত্বকের লোমকূপ বন্ধ হয়ে যাওয়া, ইনফেকশন, ব্রণ ইত্যাদি দেখা যায়। এছাড়া প্রাকৃতিক উপায়ে মৃতকোষ সম্পূর্ণরুপে দূর হয় না বলে ত্বকে আঁইশ দেখা যায়। ত্বকে আঁইশ দেখলে এক্সফোলিয়েশনের কথা ভাবতে পারেন। ত্বক সংবেদনশীল বলে এক্সফোলিয়েশনের ধরন নির্বাচনে সচেতন হতে হয়। ত্বকের সংবেদনশীলতা অথবা শুষ্কতা বেশি হলে কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েশন উপযুক্ত নয়। কারণ এতে ত্বক উক্ত্যক্ত হবে অথবা শুষ্কতা বেড়ে যাবে। শুরুর দিকে সপ্তাহে একবারের বেশি কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েশন করবেন না। এখানে মুখমণ্ডলে ত্বকের মৃতকোষ দূর করার কিছু উপায় দেয়া হলো।
ন্যাচারাল স্পঞ্জ: মুখমণ্ডলের মৃতকোষ অপসারণে ন্যাচারাল স্পঞ্জ বেশ কার্যকর হতে পারে। প্রথমে একটি ন্যাচারাল স্পঞ্জকে পানিতে ভিজিয়ে চিপে পানি বের করে নিন। তারপর ছোট ছোট বৃত্তে হালকা ঘষে মুখমণ্ডলের মরা কোষ তুলে ফেলুন। ত্বককে উক্ত্যক্ত করতে না চাইলে স্পঞ্জ দিয়ে বেশি চাপ দেবেন না। হালকা ঘর্ষণই মৃতকোষকে তুলে আনতে যথেষ্ট, কারণ সেগুলো ত্বকে দৃঢ়ভাবে লেগে থাকে না।
ওয়াশক্লথ: অতিরিক্ত সংবেদনশীল ত্বকের মৃতকোষ দূর করতে ক্লথওয়াশের ব্যবহারই সর্বোত্তম হতে পারে। একটি সাধারণ ক্লথওয়াশ নিয়ে কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে নিন। তারপর ছোট ছোট বৃত্তে ত্বকে মৃদুভাবে ঘষতে থাকুন। এক্সফোলিয়েশনের পূর্বে মুখমণ্ডল ধুয়ে নিলে আরো উপকার পাওয়া যেতে পারে, কারণ এতে ত্বকের ছিদ্র উন্মুক্ত হয়।
ফেস স্ক্রাব: মুখমণ্ডলের মৃতকোষ সরাতে জনপ্রিয় আরএকটি উপায় হলো এক্সফোলিয়েটিং স্ক্রাব/ফেস স্ক্রাব। কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে যে এটা ত্বককে ড্যামেজ করতে পারে। তাই সঠিক ফেস স্ক্রাব বেছে নিতে হবে। কঠিন কণা রয়েছে এমন প্রোডাক্ট এড়িয়ে চলুন, যেমন- বাদামের খোসা। যেসব স্ক্রাব লবণ বা চিনি থেকে তৈরি করা হয়েছে তা ব্যবহার করতে পারেন, কারণ এগুলো সহজে মিশে যায় ও ত্বকে সূক্ষ্ম ক্ষত সৃষ্টি করে না। শুষ্ক বা সংবেদনশীল ত্বকের জন্য লবণ/চিনির স্ক্রাব উপযুক্ত নয় এবং সপ্তাহে একবারের বেশি ব্যবহার করবেন না।
কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েশন: কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েশনের জন্য যেসব প্রোডাক্ট পাওয়া যায় সেগুলোতে মাইল্ড অ্যাসিড থাকে, যা ত্বকের মরা কোষগুলোকে দূর করে। মুখমণ্ডলে এক্সফোলিয়েশনের জন্য বাজারজাত অধিকাংশ প্রোডাক্টেই কম মাত্রায় কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েন্ট ব্যবহার করা হয়, তাই এগুলো বেশিরভাগ মানুষের জন্য নিরাপদ। কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েন্টের সবচেয়ে প্রচলিত ধরন হলো আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড, বিটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড ও রেটিনল।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে প্রচলিত আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড হলো গ্লাইকোলিক অ্যাসিড, যা আখ থেকে সংগ্রহ করা হয়। এটা মৃতকোষগুলোকে সহজে অপসারনের মাধ্যমে নতুন কোষকে প্রকাশমান করে। বিটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড বন্ধ হয়ে যাওয়া ত্বকের ছিদ্রকে খুলে দেয়। এটা তৈলাক্ত ত্বকে ব্যবহারের জন্য বেশি উপযুক্ত। সবচেয়ে প্রচলিত বিটা হাইড্রক্সি অ্যাসিড হলো স্যালিসাইলিক অ্যাসিড, যেটাকে চিকিৎসকেরা ব্রণের চিকিৎসায় ব্যবহার করেন। আরেকটি শক্তিশালী কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েন্ট হলো রেটিনল। এটা হলো এক ধরনের ভিটামিন এ। ত্বকের যতœ, মরা কোষ অপসারণ ও ব্রণের চিকিৎসায় রেটিনল ব্যবহার করা হয়। রেটিনল প্রদাহ বাড়াতে পারে। তাই একজিমা, সোরিয়াসিস ও রোসাশিয়া থাকলে এটাকে এড়িয়ে চলুন।
আপডেট এবং সর্বশেষ খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন ।।
0 মন্তব্য
আপনার মতামত প্রকাশ করুন