ইমদাদুল্লাহ বাবু: রাষ্ট্রায়ত্ত্ব অগ্রণী ব্যাংকের সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রেখে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বেসরকারি সফটওয়ার সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ফ্লোরা টেলিকমের বিরুদ্ধে। যাতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগাসাজশের অভিযোগও রয়েছে। এছাড়া ‘কোর ব্যাঙ্কিং’ সফটওয়ার সরবরাহ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অগ্রণী ব্যাংক থেকে বাড়তি টাকা নেয়ার অভিযোগও রয়েছে ফ্লোরা টেলিকমের বিরুদ্ধে। আমানতের সুরক্ষার স্বার্থে এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেছেন ব্যাংকের দুই আমানতকারী। বিষয়টি তদন্ত করতে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত।
২০১৮ সালে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেমিনসের সাথে ব্যাংকিং ব্যবস্থাপনায় ব্যবহৃত ‘কোর ব্যাঙ্কিং’ সফটওয়্যারের জন্য চুক্তি করে রাষ্ট্রায়াত্ত্ব অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড। পরে এই সফটওয়্যার ১০ বছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণের কাজ বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান ফ্লোরা টেলিকমকে দেয় টেমিনস।
সফটওয়্যারটি নিয়মিত আপগ্রেড করার কথা থাকলেও ফ্লোরা টেলিকম তা করেনি। পরে ২০১৯ সালে আপডেট করার জন্য টেমিনসের অগোচরে ৩২০ কোটি টাকার প্রস্তাব দেয় কোম্পানিটি। যা বাজারমূল্য থেকে কয়েকগুন বেশি। এরপর টেমিনস ফ্লোরা টেলিকমের জায়গায় বাংলাদেশী অন্য কোম্পানিকে অগ্রণী ব্যাংকের ‘কোর ব্যাঙ্কিং’ সফটওয়্যার দেখা-শোনার দায়িত্ব দিতে চাইলে ফ্লোরা টেলিকম প্রায় ১০০ কোটি টাকা কমিয়ে নতুন প্রস্তাব দেয়। সেই সাথে অগ্রণী ব্যাংকের শীর্ষ এক কর্মকর্তার সই জাল করে এক চিঠিতে টেমিনসকে জানানো হয় কাজটি ফ্লোরা টেলিকমকে দেয়া হয়েছে। পরে টেমিনস অগ্রণী ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করলে বিষয়টি ভূয়া বলে ধরা পড়ে।
এদিকে, সফটওয়্যার আপডেট ও রক্ষণাবেক্ষণে ত্রুটি থাকায় ঝুঁকিতে পড়ে অগ্রণী ব্যাংকের সাইবার নিরাপত্তা। এতে উদ্বিগ্ন দুই আমানতকারী এ বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন।
রিটের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক এবং অর্থ মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি দুই মাসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেন। রিটকারীদের আইনজীবী জানান, গত জুন মাসে অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সভায় ফ্লোরা টেলিকমের সাথে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত হলেও তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।
এ বিষয়ে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস-উল ইসলাম ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। তবে মুঠোফোনে তিনি জানান, কোম্পানিটির সাথে চুক্তি বাতিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এসব অনিয়মের বিষয়ে ফ্লোরা টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা রফিকুল ইসলাম ডিউকের সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেও কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তাসলিমুল আলম: সরকারি-বেসরকারি...
বিস্তারিতআপডেট এবং সর্বশেষ খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন ।।
0 মন্তব্য
আপনার মতামত প্রকাশ করুন