জে ইউ জুবায়ের: বহুমুখী উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে আওয়ামী লীগ সরকারের গত দেড় দশকে বদলে গেছে কক্সবাজারের মহেশখালী দ্বীপের চিত্র। এই দ্বীপকে ঘিরে গড়ে উঠেছে গভীর সমুদ্র বন্দর, আধুনিক তেল খালাস কেন্দ্র ও মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। আগামী ডিসেম্বরেই এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট থেকে ৬শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে। আংশিক চালু হয়েছে দেশের একমাত্র গভীর সমুদ্র বন্দর। আর উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে তেল খালাস কেন্দ্র।
কক্সবাজার জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মহেশখালি এখন বহুমুখী উন্নয়নের কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের গত দেড় দশকে মহেশখালীতে যে বিপুল উন্নয়ন চলছে তার লক্ষ্য ভবিষ্যতে এই দ্বীপকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা। এখানেই নির্মাণ করা হচ্ছে গভীর সমুদ্র বন্দর। এই দ্বীপে যাওয়া আসার দুর্গম চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে আরও একাধিক বড় উন্নয়ন প্রকল্প।
এই দ্বীপের কালারোমা ছড়া ইউনিয়নে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে আধুনিক তেল খালাস কেন্দ্র। গভীর সমুদ্রে নোঙ্গর করা মাদার ভ্যাসেল থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ও ডিজেল পাইপ লাইনের মাধ্যমে খালাস হয়ে জমা হবে এখানকার ৬টি বিশাল ট্যাংকারে। পরে স্থলভাগের পাইপলাইনে ১১৬ কিলোমিটার দূরে ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পৌঁছানো হবে শোধনের জন্য। এতে ছোট জাহাজ দিয়ে তেল খালাসে যে বাড়তি খরচ হত তা বন্ধ হবে এবং সরকারের ৮শ’ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।
চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসেই এই প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মহেশখালি গভীর সমুদ্রে নির্মিত হয়েছে ২টি ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল। স্থলভাগে এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনাও করছে সরকার।
মহেশখালিতে সবচেয়ে বড় প্রকল্প ১২শ’ মেগাওয়াট মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ৫১ হাজার ৮শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পের প্রথম ইউনিটে শিগগিরই উৎপাদন শুরু হবে। আগামী ডিসেম্বরইে এই কেন্দ্রের ৬শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বলে জানালেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
এশিয়ার সমুদ্র বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে নির্মাণ করা হয়েছে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর। ১৭ হাজার ৭শ ৭৭ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই বন্দর দেশের সবচেয়ে গভীর সমুদ্র বন্দর। আন্তর্জাতিক মাদার ভেসেল অনায়াসে ভিড়তে পারবে এই বন্দরে। এটি চালু হলে আমুল পাল্টে যাবে দেশের অর্থনীতির গতিধারা, স¤প্রসারিত হবে আন্ত:দেশীয় বাণিজ্য। বাড়বে বাংলাদেশের ভু-রাজনীতির গুরুত্ব।
সবগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে আছে। এসব প্রকল্পে কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুফল পেয়েছে স্থানীয়রা।
এসব প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি মহেশখালি দ্বীপের সাথে সারাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে নুতন নুতন সেতু, সড়ক নির্মাণের কাজও চলছে পুরোদমে।
এক নজরে এসপিএম প্রকল্প
প্রকল্প শুরু ২০১৫ সাল
প্রস্তুত পাইপ লাইন ২২০ কিলোমিটার
ট্যাংক ও পাম্পিং স্টেশন ৬টি
বার্ষিক তেল খালাস ক্ষমতা ৯০ লাখ মে.টন
Zubayer/shimul