দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান

প্রকাশিত: ১২-০৯-২০২৩ ১৮:৪৪

আপডেট: ১৩-০৯-২০২৩ ০৯:৪৬

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাড়ের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মঙ্গলবার (১২ই সেপ্টেম্বর) এক প্রজ্ঞাপনে একথা জানায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বর্তমান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকির স্থলাভিষিক্ত হবেন।

আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেছেন। এতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের তারিখ হইতে কার্যকর হইবে। 

বর্তমান প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী অবসরে যাচ্ছেন আগামী ২৫শে সেপ্টেম্বর। কিন্তু সে সময় সুপ্রিম কোর্টে অবকাশকালীন ছুটি থাকায়, গত ৩১শে আগস্ট ছিল তার বিচারিক জীবনের শেষ কর্মদিবস। হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ২০২১ সালের ৩১শে ডিসেম্বর শপথগ্রহণের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। টানা ২০ মাস বিচারিক দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তাঁর ৬৭ বছর পূর্ণ হবে ২৫শে সেপ্টেম্বর। তাই সংবিধান অনুসারে ওইদিন তিনি অবসরে যাবেন।

দেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসএস, এমএসএস ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৬ সালে আইনজীবী হিসেবে জেলা বারের সনদ প্রাপ্ত হন। ১৯৮৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে এবং ২০০৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।

ওবায়দুল হাসান সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে ৫ বছর দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে ২০০৯ সালের ৩০শে জুন যোগদান করেন এবং ২০১১ সালের ৬ই জুন একই বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।

তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগঠিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর একজন সদস্য হিসেবে ২০১২ সালের ২৫শে মার্চ যোগদান করেন এবং ১৩ই ডিসেম্বর ২০১২ তারিখে এই ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হয়ে ২০১৫ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। ওবায়দুল হাসান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ কর্মরত থাকাকালীন ১১টি মামলার রায় প্রদান করা হয়েছে। তিনি ২০২০ সালের তেসোরা সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।

বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ১৯৯১ সালে হংকং এ অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে সিঙ্গাপুরে একটি আইন সম্মেলনে যোগদান করেন এবং বুয়েন্স আয়ার্স, আর্জেন্টিনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ বিষয়ক একটি কনফারেন্সে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। এছাড়াও ২০১৫ সালের আগস্ট মাসের শেষ দিকে নেদারল্যান্ডস এর হেগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, তৎকালীন যুগোস্লাভিয়ার বিচারকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় যোগদান করেন।

‘অবর্ণনীয় নির্মমতার চিত্রঃ একাত্তরের বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশঃ একজন যুদ্ধশিশুর গল্প ও অন্যান্য’ নামক দু’টি গ্রন্থ রচনা করেছেন ওবায়দুল হাসান।

 

sanjida/habib