বিনোদন ডেস্ক : দুই সহস্রাধিক গানের গীতিকবিতা লিখেছেন প্রয়াত গাজী মাজহারুল আনোয়ার। তিনি শুধু গীতিকবিই নন, পাশাপাশি একজন চিত্রনাট্যকার, চিত্র পরিচালক, প্রযোজকও বটে। গত বছরের আজকের এই দিনে (৪ সেপ্টেম্বর) না ফেরার দেশে পাড়ি জমান কিংবদন্তি এই ব্যক্তিত্ব।
১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি তৎকালীন রেডিও পাকিস্তানে গান লেখা শুরু করেন। তার গানে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম, প্রকৃতি, জীবনবোধ, প্রেম, বিরহ, স্নেহ’সহ নানা প্রসঙ্গ।
স্কুলে পড়ার সময় থেকেই তিনি দেয়াল পত্রিকায় কবিতা লিখতেন। ষাটের দশকের শুরুতে তিনি চিকিৎসা বিজ্ঞানে পড়াশুনা শুরু করেন। কবি থেকে কীভাবে গীতিকবি হয়ে উঠলেন সেটির বর্ণনা উঠে আসে ২০১৩ সালে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে।
প্রথম যে গানটির মাধ্যমে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের গানে শিল্পী রুনা লায়লার অভিষেক হয়েছিল সেটি তার লেখা ‘গানেরই খাতায় স্বরলিপি’।
গাজী মাজহারুল আনোয়ার রচিত কিছু কালজয়ী গান হলো-‘জয় বাংলা, বাংলার জয়’, ‘আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’, ‘গানের খাতায় স্বরলিপি লিখে’, ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘ও পাখি তোর যন্ত্রণা’, ‘ইশারায় শীষ দিয়ে’, ‘চোখের নজর এমনি কইরা’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’, ‘চলে আমার সাইকেল হাওয়ার বেগে’ প্রভৃতি।
১৯৮২ সালে চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। তার নির্মিত প্রথম সিনেমা ‘নান্টু ঘটক’। এরপর তিনি ‘শাস্তি’, ‘স্বাধীন’, ‘চোর’, ‘সন্ধি’, ‘স্বাক্ষর’, ‘শর্ত’, ‘সমর’, ‘শ্রদ্ধা’, ‘স্নেহ’, ‘আম্মা’, ‘পরাধীন’, ‘তপস্যা’, ‘উল্কা’, ‘ক্ষুধা’, ‘রাগী’, ‘আর্তনাদ’, ‘জীবনের গল্প’, ‘এই যে দুনিয়া’, ‘পাষাণের প্রেম’ ও ‘হৃদয় ভাঙা ঢেউ’ সিনেমাগুলো নির্মাণ করেছেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখায় গাজী মাজহারুল আনোয়ার দেশের প্রথম পুরস্কার ‘বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল’ লাভ করেছিলেন। ২০০২ সালে তাকে প্রদান করা হয় একুশে পদক। ২০২১ সালে পেয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার। এছাড়া পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি।
sanjida/shimul