এজাজুল হক মুকুল: আমেরিকার একটি বাণিজ্যিক জনসংযোগ প্রতিষ্ঠানকে টাকা দিয়ে নিজের পক্ষে বিবৃতি জোগাড় ও প্রচার কাজ করিয়েছেন গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস। দেশে কর ফাঁকি ও শ্রমিকদের পাওনা দেয়ার মামলার বিচার এড়াতে টাকার বিনিময়ে মার্কিন পত্রিকায় বিজ্ঞাপনও ছাপিয়েছিলেন এই নোবেল বিজয়ী। মামলা থেকে বাঁচতে তিনি এ ধরনের কৌশল নিয়েছেন বলে মনে করেন আইনজীবীরা। কিভাবে এবং কোত্থেকে এসব টাকা তিনি বিদেশি কোম্পানিকে দিয়েছেন তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী।
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোভিত্তিক বাণিজ্যিক জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান ‘সিশন পিআর’ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রেসরিলিজ পাঠানো, প্রচারণা এবং তার ক্লায়েন্টদের চাহিদা অনুযায়ী কাজ করে টাকার বিনিময়ে। গত ২৭শে আগস্ট এই প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে গ্রামীণ ব্যাংকের সাবেক এমডি ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে শতাধিক নোবেল বিজয়ীসহ ১৮৩ বিশিষ্ট ব্যক্তির স্বাক্ষর সম্বলিত একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করে। তাদের স্বাক্ষর সংগ্রহ প্রচারের কাজটিও করে এই পিআর প্রতিষ্ঠান। আর এ সংস্থার অন্যতম প্রধান ব্যক্তি স্যাম ডেলি হ্যারিস মূলত ইউনূসের ঘনিষ্ঠজন।
এরও দুই মাস আগে বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ করে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে ইউনূসের পক্ষে খোলা চিঠি দেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ৪০ নেতা। অভিযোগ আছে, লবিস্টের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন আকারে ওই বিবৃতি দেয়াতে খরচ করা হয় প্রায় ৮০ লাখ টাকা।
দেশে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় আইনি লড়াইয়ে হেরে ডক্টর ইউনূস বিচারক ও বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে টাকার বিনিময়ে বিদেশি লবিস্ট প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়ে এসব করাচ্ছেন বলে জানান আইনজীবীরা।
মামলা ঠেকাতে ও বিচার এড়াতে অর্থের বিনিময়ে বিদেশিদের বিবৃতি আনা ও প্রচার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির অপকৌশল বলে মনে করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
শ্রম আইন লঙ্ঘন ও কর ফাঁকির মামলায় ইউনুসের বিচার চলছে। এর আগে কর ফাঁকির মামলায় দেশের সর্বোচ্চ আদালতে হেরে ১৫ কোটি টাকা কর পরিশোধ করতে হয়েছে তাকে। তার মালিকানাধীন গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিকদের পাওনা ১২শ’ কোটি টাকা না দেয়ার আরও একটি মামলা বিচারাধীন আছে। এছাড়া লভ্যাংশের ২১ কোটি টাকা না দেয়ার অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের আরও ১৮ শ্রমিকের করা একটি মামলায় ইউনূসের নামে সমনও জারি করেছে শ্রম আদালত। এছাড়া ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকমের বিরুদ্ধে ৩ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগের তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
EHM/sat