৮৫ শতাংশ পুরুষ কর্মীকে পিতৃত্বকালীন ছুটি দিতে চায় জাপান

প্রকাশিত: ২৬-০৩-২০২৩ ১৭:৫৩

আপডেট: ২৬-০৩-২০২৩ ১৭:৫৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ২০৩০ সালের মধ্যে ৮৫ শতাংশ পুরুষ কর্মীর পিতৃত্বকালীন ছুটি নিশ্চিত করতে চায় জাপান সরকার। তবে পিতৃত্বকালীন ছুটি নিতে রাজি নন বেশিরভাগ জাপানি পুরুষ। তারা মনে করেন,  ছুটিতে গেলে তাদের ক্যারিয়ারের ক্ষতি হবে।

দীর্ঘ কর্মঘন্টার জন্য পরিচিত জাপান। এর প্রভাবে দেশটিতে গত কয়েক বছর ধরেই কমছে জন্মহার। এনিয়ে চিন্তিত জাপান সরকার। তবে জাপানি কর্তৃপক্ষ দেশটির কুখ্যাত দীর্ঘ কর্মঘণ্টার মোকাবিলা করার জন্য গত দশকে ব্যাপকভাবে প্রচার করেছে। 

পরিস্থিতি পাল্টানোর 'শেষ সুযোগ' কাজে লাগাতে প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা গত সপ্তাহে একটি নীতিমালা উন্মোচন করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে শিশু সহায়তা বৃদ্ধি এবং পিতৃত্বকালীন ছুটি নেওয়া। জাপানে পুরুষ কর্মীদের পিতৃত্বকালীন ছুটি নেওয়ার সংখ্যা ২০২৫ সালের মধ্যে বর্তমান ১৪ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশে উন্নীত করার অঙ্গীকার করেছে। আর ২০৩০ সালের মধ্যে ৮৫ শতাংশ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে দেশটি।

কিন্তু বিশ্বের তৃতীয়-বৃহত্তর অর্থনীতির দেশে এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়ন করা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ বাড়ছে। অল্পবয়সী কর্মীদের নিয়ে কাজ করা শ্রম ইউনিয়ন, পোশের সদস্য মাকোতো ইওয়াহাশি বলেন, যদিও সরকারের পরিকল্পনাটি ভালো উদ্দেশ্য ছিল। তবে অনেক জাপানি পুরুষ তাদের নিয়োগকর্তাদের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়ার কারণে পিতৃত্বকালীন ছুটি নিতে ভয় পাচ্ছে। তারা মনে করছে এটি তাদের ভবিষ্যতের জন্য খারাপ প্রভাব বয়ে আনবে।

২০২১ সালে জাপানি পার্লামেন্টে পাস করা একটি বিলের অধীনে জাপানি পুরুষরা চার সপ্তাহের পিতৃত্বকালীন ছুটি পাবে। এসময় তাদের বেতনের ৮০ শতাংশ দেওয়া হবে। কিন্তু আইন থাকা সত্ত্বেও পুরুষরা 'ভয়' পায় যে ছুটি নেওয়া তাদের পদোন্নতির সম্ভাবনার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বা তাদের কম দায়িত্বের সাথে অন্য পদে নিয়োগ করা হতে পারে।

গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী কিশিদা উদ্বেগগুলি স্বীকার করে ভাতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বেসরকারি ফার্মগুলিকে তাদের কর্মক্ষমতা প্রকাশ করতে উৎসাহিত করার মাধ্যমে পিতৃত্বকালীন ছুটি গ্রহণকে বাড়ানোর লক্ষ্যে একটি পরিকল্পনাও উন্মোচন করেছেন।

১৮৯৯ সালে রেকর্ড শুরু হওয়ার পর ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো জাপানে নতুন জন্মের সংখ্যা ৮ লাখের নিচে নেমে গেছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ক্ষুদ্র রাজ্য মোনাকোর পর জাপানে এখন বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা রয়েছে। যা প্রায় ২৮ শতাংশ। জাপান সরকার বিষয়টিকে উদ্বেগজনক হিসাবে দেখছে। কিশিদা সতর্ক করেছেন যে, আগামী ছয় থেকে সাত বছর ক্রমহ্রাসমান জন্মহার প্রবণতাকে বাড়ানোর শেষ সুযোগ হবে"।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী কিশিদা সংসদ সদস্যদের জানিয়েছেন, 'জাপানের সমাজব্যবস্থা টিকে থাকবে কি না সে পরিস্থিতির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি আরও বলেছেন, 'শিশু এবং শিশু লালন-পালন সংক্রান্ত নীতির প্রতি মনোযোগ দেওয়া এখন এমন একটি বিষয়ে পরিণত হয়েছে যা নিয়ে অপেক্ষা বা স্থগিত করা সম্ভব না'।

rocky/sharif