অনলাইন ডেস্ক: নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর না করতে চাপ অব্যাহত রেখেছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনের দাবিতে খুলনা, রাজশাহী ও বরিশালের কয়েকটি জেলার রুটে আজও বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন তারা। অঘোষিত ধর্মঘটের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকাল থেকে খুলনা, মেহেরপুর, নড়াইল, নওগাঁ ও বরিশাল, গাজীপুর, সাতক্ষীরা, নড়াইল ও হিলিসহ বিভিন্ন স্থানে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। গতকাল থেকে কোন ধরণের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই এ ধর্মঘট শুরু হয়।
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ঢাকা-মমনসিংহ মহাসড়কের মাওনা চৌরাস্তায় মহাসড়ক অবরোধ করেন পরিবহন শ্রমিকরা। আজ সকাল ৮টা থেকে এ অবরোধ শুরু করেন তারা। পরে দুপুর ১২টার দিকে অবরোধ তুলে নিলে এই রুটে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বরিশাল থেকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। বাড়তি ভাড়া দিয়ে অটোরিকশা অথবা মোটরসাইকেলে করে যাতায়াত করতে হচ্ছে যাত্রীদের। জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ফরিদ হোসেন সরদার জানান, আগামী ২২ নভেম্বর কেন্দ্রীয়ভাবে মিটিং আছে। কিন্তু তার আগেই শ্রমিকরা অভ্যন্তরীণ রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।
আজ সকালে খুলনার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করেনি। গতকাল থেকেই খুলনায় ধর্মঘট শুরু করে পরিবহণ শ্রমিকরা। এদিকে মহানগরের সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল ও রয়্যালের মোড়ে বাসগুলো সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। প্রয়োজনের তাগিদে মাহেন্দ্র, মিনি পিকআপ, মাইক্রোবাসসহ ছোট যানবাহনগুলোতে কয়েকগুণ ভাড়া দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছাতে দেখা গেছে।
খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম বেবী বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের প্রতিবাদে শ্রমিকরা দ্বিতীয় দিনের মতো বাস চালাচ্ছেন না। তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি শুরু করেছেন। আইন সংশোধন না করা পর্যন্ত শ্রমিকরা ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন।
রোববার দুপুর থেকে যশোরের ১৮টি রুটে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। শ্রমিকরা বলছেন অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনার জন্য নতুন সড়ক আইনে তাদের ঘাতক বলা হচ্ছে। একই দাবিতে ঝিনাইদহে মোটর শ্রমিকদের ডাকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি চলছে।
বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে মেহেরপুরেও। জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতিয়ার রহমান বলেন, নতুন সড়ক পরিবহন আইনে বড় ধরনের জেল ও জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। আর তাই আইন সংশোধনের দাবিতে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া, মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়কসহ জেলার সবরুটে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন শ্রমিকরা।
এদিকে নড়াইল-যশোর, নড়াইল-লোহাগড়াসহ অভ্যন্তরীণ পাঁচটি রুটে কোনো ঘোষণা ছাড়াই শ্রমিকরা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন। পূর্বঘোষণা ছাড়া বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় যাত্রীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহম্মেদ খান জানান, বাস বন্ধ রাখার ব্যাপারে সংগঠন থেকে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কিন্তু আমাদের সঙ্গে আলাপ না করে বাস চালক-শ্রমিকরা নতুন সড়ক পরিবহন আইনের ভয়ে স্বেচ্ছায় অভ্যন্তরীণ পাঁচটি রুটে বাস চালানো বন্ধ করে দিয়েছেন।
অন্যদিকে, সোমবার থেকে এখন পর্যন্ত নওগাঁর অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার কোনো বাস চলাচল করেনি। ফলে নওগাঁর সঙ্গে বগুড়া, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাটের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন যাত্রীরা। হঠাৎ করে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়ায় টার্মিনালে এসে আটকা পড়েছেন যাত্রীরা। এ ব্যাপারে দ্রæত প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
আপডেট এবং সর্বশেষ খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন ।।
0 মন্তব্য
আপনার মতামত প্রকাশ করুন