কুমিল্লা সংবাদদাতা : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় মন্দভাগ স্টেশনে আন্তঃনগর ট্রেন ‘তুর্ণা নিশীথা’ ও ‘উদয়ন এক্সপ্রেসে’র সংঘর্ষে অন্তত ১৬ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে ৭৪ জন। তবে হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে। গতরাত ৩টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তুর্ণা নিশীথার সাথে সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেসের এই সংঘর্ষ হয়। নিহত ১৬ জনের মধ্যে এরিমধ্যে ১৫ জনের পরিচয় শনাক্ত করে তাদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। তবে নিহত অনেকের স্বজনরা এখনো ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে না পারায় মরদেহ হস্তান্তরে সময় লাগছে।
পাশাপাশি রেল মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে।
নিহতরা হলেন−চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের পশ্চিম রাজারগাঁওয়ের মুজিবুল রহমান (৫৫), হবিগঞ্জের ভোল্লার ইয়াছিন আরাফাত (১২), চুনারুরঘাটের তিরেরগাঁওয়ের সুজন আহমেদ (২৪), মৌলভীবাজারের জাহেদা খাতুন (৩০), চাঁদপুরের কুলসুম বেগম (৩০), হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের আল-আমিন (৩০), হবিগঞ্জের আনোয়ারপুরের আলী মোহাম্মদ ইউসুফ (৩২), হবিগঞ্জের বানিচংয়ের আদিবা (২), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরের সোহামনি (৩), চাঁদপুরের উত্তর বালিয়ার ফারজানা (১৫), চাঁদপুরের হাইমচরের কাকলী (২০), হবিগঞ্জের রিপন মিয়া (২৫), চাঁদপুরের হাইমচরের মরিয়ম (৪), নোয়াখালীর মাইজদির রবি হরিজন (২৩), চাঁদপুর সদরের ফারজানা (১৫), হবিগঞ্জের চুনারুঘাটের পিয়ারা বেগম (৩২)।
এদিকে, হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এর আগে সোমবার দিনগর রাত তিনটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দভাগ রেল স্টেশনে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেন ‘তূর্ণা নিশিথা’র সাথে সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী ‘উদয়ন এক্সপ্রেসে’র সংঘর্ষ হয়। এতে দুমড়ে-মুচড়ে যায় উভয় ট্রেনের কয়েকটি বগি। ঘটনাস্থলেই কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটে। পরে হাসপাতালে মারা যান আরো কয়েকজন। তবে হতাহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
দুর্ঘটনার পরপরই আশপাশের এলাকা থেকে স্থানীয়রা ছুটে আসেন। তাদের সহযোগিতায় হতাহতদের উদ্ধারে কাজ করে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। প্রায় পৌনে ৮ ঘন্টার চেষ্টায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উদ্ধারকারি ট্রেন এসে দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেন দু’টি উদ্ধার করে। সরিয়ে নেয়া হয়েছে ট্রেনের ক্ষতিগ্রস্ত বগি। আহতদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে।
জেলার পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান, হতাহতদের উদ্ধারে কাজ শেষ হয়েছে। এরিমধ্যে ঢাকার সাথে চট্টগ্রাম ও সিলেটের ট্রেন চলাচলও স্বাভাবিক হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন ও রেল সচিব মোফাজ্জল হোসেন।
হতাহতদের উদ্ধারে কাজে অংশ নেয় ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয়রা। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদুল আলম উদ্ধার কাজ তদারকি করেন। মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে সারাদেশে।
নিজস্ব প্রতিবেদক: চিকিৎসায় অবহেলায়...
বিস্তারিতআপডেট এবং সর্বশেষ খবর পেতে সাবস্ক্রাইব করুন ।।
0 মন্তব্য
আপনার মতামত প্রকাশ করুন